আইন যখন আওয়ামীলীগের দখলে

আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে দেশের আইনশৃঙ্খলা জিম্মি। প্রশাসন থেকে শুরু করে ছাত্র লীগ, যুব লীগ, সব বিভাগেই সহিংস। দেশের মানুষকে অন্যায়ভাবে দোষী সাব্যস্ত করে নিরপরাধ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করে সাজা দেওয়া হয়েছে। ধূসর কালো টাকা ও সম্পদের পাহাড় নিয়ে আসে। যে সম্পদ অন্যায়ভাবে নেয়া হয়েছে। জনগণের টাকায় লীগ বাহিনীর সেবা দিন দিন চলে। এই কালো টাকার ভাগ পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফলে তারা অন্যায় মেনে নিয়ে নিরপরাধ মানুষের ওপর জুলুম করে।

নির্বাচনে তাদের দলীয় অপরাধীদের মনোনয়ন দেওয়ায় উৎসাহের কমতি নেই আওয়ামী লীগের। দেখা যাচ্ছে, নিজ দলে অপরাধী আর অপরাধী নয় তাদের মধ্যে যারা অপরাধী, আওয়ামী নেতৃত্বের পছন্দ! এত বেশি পছন্দ যে নির্বাচনে হেরে যাওয়া নিশ্চিত হলেও নিজ দলের অপরাধীদের মনোনয়ন দিতে কোনো অসুবিধা বোধ করেন না!! ফেনীর কুখ্যাত অপরাধী জয়নাল হাজারীর বিরুদ্ধে একের পর এক অপরাধ মামলা এবং তার বিরুদ্ধে শেষ ফৌজদারি মামলাটিও অপসারণ করা হয়েছে কয়েকদিন আগে! তাই জয়নাল হাজারী আর অপরাধী নন, শুধু ধোয়া তুলসী পাতা!!

দায়মুক্তির কারণে বাংলাদেশ যে দুর্বৃত্তদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে তা কারও অজানা নয়। আমি নিজেও এ নিয়ে অনেক লিখেছি। কিন্তু দুর্নীতি কমেনি এবং বাংলাদেশে এত বড় আকারে এবং বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে দেশটি এখন আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ও অপরাধপ্রবণ দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

এটি একটি বিবেচ্য বিষয় এবং এটিকে বারবার আলোচনার প্রয়োজন হতো না যদি সমগ্র সমাজ, বিশেষ করে দরিদ্রতম শ্রমজীবী ​​জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত না হতো এবং তাদের জীবন চিরতরে ব্যাহত হতো। কিন্তু তা সত্ত্বেও সবচেয়ে জঘন্য বিষয় হলো ক্ষমতাসীন দল ও জোটের মধ্যেও নেই কোনো আত্মসমালোচনা। জোটের শরিকরা সুবিধাবাদী অবস্থান থেকে জোটের রাজ্যে নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও নিজেদের বাঁচাতে গিয়ে মাঝেমধ্যে সরকারের সমালোচনা করে। কিন্তু এই দ্বৈত কর্মের জন্য তাদের সমালোচনা জনগণের উপর কোন প্রভাব ফেলে না। তদুপরি, লোকেরা তাদের সুবিধাবাদী হিসাবে বিচার করার প্রবণতা রাখে।

এখানে বলা আবশ্যক যে, হাসিনা ও তার সরকার তাদের নিজ দলের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি আবদুর রাজ্জাককে লন্ডনে চিকিৎসার জন্য কোনো টাকা দেননি। আওয়ামী লীগ দলীয় রাজ্জাকের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন তার জন্য কিছু অর্থের ব্যবস্থা করেন, যা চিকিৎসার প্রয়োজনের তুলনায় কম ছিল। আবদুর রাজ্জাক কিছুদিন আগে লন্ডনে মারা যান। এটা আওয়ামী লীগ দলের জন্য কোনো অর্জন নয়। এছাড়াও অন্যান্য প্রশ্ন আছে. হাসিনা উদারভাবে হুমায়ূন আহমেদকে যে টাকা দিয়েছিলেন, তিনি কি নিজের পকেট থেকে দিয়েছেন, নাকি জনগণের পকেট থেকে দিয়েছেন? এ প্রশ্ন কি দেশের মানুষ করতে পারে না? এ প্রশ্ন কেউ না করলেও অনুচিত? তাছাড়া হুমায়ূন আহমেদ নিজেই নাকি এই টাকা নিলেন কিভাবে? এই আচরণ কোন আত্মসম্মানিত ব্যক্তির জন্য উপযুক্ত? আমি এই বিষয়টি উত্থাপন এবং উল্লেখ করার একমাত্র কারণ হল দেশে দরিদ্র মানুষের জন্য কোন চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই।

এভাবেই দেশের জনগণের টাকা লুটপাট করছে দুর্নীতিবাজ সরকার। আর আমরা শুধু হাহাকার করছি। আইনের আশ্রয় নিলে প্রশাসন বা ক্ষমতার টাকা দিয়ে আইনের মুখ বন্ধ করে দিচ্ছে সরকার। আইনের শাসন অন্ধ। ক্ষমতাবানরা আরো শক্তিশালী হচ্ছে আর গরীবরা আরো দরিদ্র হচ্ছে। আর মধ্যবিত্ত তো দূরের কথা। অথর্ব প্রশাসন চোখ বড় বড় করে দেখছে আর আখ গোছাচ্ছে। সারাদেশে চলছে লুট উৎসব। পুরোদমে চলছে ছাত্রলীগ। দুর্নীতি চলছে।

8 Responses

  1. এই আওয়ামীলীগই একদিন এই দেশটাকে নষ্ট করবে

  2. মনের কথা গুলো সুন্দর করে লিখে দিয়েছেন।

  3. কি আর বলবো আপনাকে। সত্য কথাগুলিও কতো সাবলীলভাবে লিখেছেন। ধন্যবাদ।

  4. এসবই জামাত-বিএনপির তৈরি গুজব

  5. আজাইরা কথা না বলে ভালো জিনিশে মন দেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *